পোস্টগুলি

লেখাপড়া মনে রাখার টেকনিক

ছবি
লে খাপড়া মনে রাখা কেবল মুখস্থ করার বিষয় নয়, বরং বিজ্ঞানসম্মত কিছু কৌশল অবলম্বন করে স্মৃতিশক্তিকে আরও কার্যকর করা সম্ভব। এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ 'গোপন' বিষয় আলোচনা করা হলো: ১. বিরতি নিয়ে রিভিশন (Spaced Repetition) জার্মান মনোবিদ হারমান এবিনঘাসের গবেষণা অনুযায়ী, আমরা কোনো কিছু পড়ার এক ঘণ্টা পর সেটির প্রায় অর্ধেক ভুলে যাই। তাই তাৎক্ষণিক রিভিশন না দিয়ে, বিরতি দিয়ে বারবার একই বিষয় পড়া উচিত। এটি "স্পেসড রিপিটেশন" নামে পরিচিত। যেমন, আজ যা পড়লেন, তার ৩০ মিনিট পর একবার, ১ দিন পর আরেকবার, ১ সপ্তাহ পর আরেকবার এবং ১ মাস পর আবার পড়ুন। এতে পড়া দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতিতে রূপান্তরিত হয়। ২. ফাইনম্যান পদ্ধতি (Feynman Technique) বিখ্যাত পদার্থবিদ রিচার্ড ফাইনম্যানের নামে এই পদ্ধতির নামকরণ করা হয়েছে। এর মূল কথা হলো: কোনো কিছু পড়ার পর তা অন্য কাউকে শেখানোর চেষ্টা করুন, যেন সে বিষয়টি সহজে বুঝতে পারে। যখন আপনি কাউকে শেখাতে যাবেন, তখন আপনাকে নিজের মতো করে বিষয়টি গুছিয়ে নিতে হবে, সরলভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে এবং আলোচনার মাধ্যমে সেটি আরও ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। এতে আপনার স্মৃতিতে পড়াটা আরও গভীরভাবে গেঁথ...

ফুলের বাগান: এক টুকরো স্বর্গ

ছবি
ফু লের বাগান হলো প্রকৃতির এক অসাধারণ সৃষ্টি, যা আমাদের মনকে আনন্দ আর প্রশান্তিতে ভরিয়ে তোলে। এটি কেবল কিছু গাছের সমারোহ নয়, বরং রঙ, সুগন্ধ আর সৌন্দর্যের এক মনোমুগ্ধকর জগৎ। একটি ফুলের বাগান তৈরি করা এবং তার যত্ন নেওয়া সত্যিই এক শিল্প। ফুলের বাগানের গুরুত্ব ফুলের বাগান আমাদের জীবনে বিভিন্নভাবে গুরুত্ব বহন করে:  * সৌন্দর্য বৃদ্ধি: ফুলের বাগান বাড়ির শোভা বাড়ায় এবং চারপাশের পরিবেশকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। বিভিন্ন রঙের ফুল চোখের জন্য দারুণ আরামদায়ক।  * মানসিক শান্তি: ফুলের বাগানে সময় কাটানো বা শুধু ফুল দেখা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে এবং মনকে সতেজ করে তোলে।  * জীববৈচিত্র্য: ফুলের বাগান মৌমাছি, প্রজাপতি ও বিভিন্ন পাখির আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করে, যা পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।  * সৃজনশীলতা: বাগান তৈরি ও পরিচর্যার মাধ্যমে সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটে। নতুন নতুন ফুলের জাত নিয়ে পরীক্ষা করা বা বিভিন্ন নকশায় বাগান সাজানো একটি দারুণ শখের কাজ হতে পারে।  * পরিবেশগত উপকারিতা: গাছপালা বাতাস থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে এবং অক্সিজেন ত্যাগ করে, যা পরিবেশকে নির্মল রাখতে স...

হরি দল ও অক্ষরজ্ঞানহীন দরিদ্র কৃষক হরিপদ কাপালী

ছবি
প্রত্যন্ত গ্রামের একজন অক্ষরজ্ঞানহীন দরিদ্র কৃষক কি কখনো কৃষি বিজ্ঞানী হতে পারেন? হতে পারেন উদ্ভাবক? যার ঘর ভাঙাচোরা, বর্ষায় যার ঘরের চাল চুয়ে জল পড়ে। খরা কিংবা বন্যায় ধানের আবাদ নষ্ট হলে সারাবছর চলতে হতো ভীষণ অভাবে।  . ভোরের আলো ফোটার আগেই যাকে তীব্র শীতে কিংবা অঝোর বৃষ্টিতে হাজির হতে হয় নিজের কর্মক্ষেত্র ফসলের মাঠে, যাকে জ্যৈষ্ঠের প্রচণ্ড খরতাপে মাথাল মাথায় ছুটতে হয় ক্ষণিক বিশ্রামের আশায় কোনো এক বৃক্ষের তলে। যার কপালে নেই কোনো গবেষকের ডক্টরেট ডিগ্রি, যার আধুনিক গবেষণা সরঞ্জামাদি ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ল্যাবরেটরি নেই, যার ল্যাবরেটরি ফসলের মাঠ।   . অথচ সেই কৃষকই যে একটি জনপদের ধান উৎপাদনের চিত্র পাল্টে দিতে পারেন। অবিশ্বাস্য মনে হলেও বাস্তবে তাই ঘটেছে। . একদিন সকালে নিজের ইরি ধান খেতে একটি ব্যতিক্রমধর্মী ধান গাছের শীষ দেখতে পেলেন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার অক্ষরজ্ঞানহীন দরিদ্র কৃষক হরিপদ কাপালী। সেই ধানগাছের ছড়াতে ধানের সংখ্যা অনেক বেশি ছিল এবং ধান গাছটিও ধানে ভারী পুষ্ট। অথচ আর কোনো ধান নেই সেটি ছাড়া। তো এই ভিন্ন ধরনের ধান গাছ দেখে হরিপদ কাপালী সে ধানটিকে আলাদা করে রাখলেন। এর...

চাই দিয়ে ছোট মাছ ধরা

আপনি চাই দিয়ে ছোট মাছ ধরা সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। "চাই" হলো মাছ ধরার একটি ঐতিহ্যবাহী ফাঁদ, যা প্রধানত ছোট মাছ ধরার জন্য ব্যবহৃত হয়। চাই কী? চাই হলো বাঁশ বা বেত দিয়ে তৈরি এক প্রকার জালের মতো ফাঁদ। এটি সাধারণত লম্বাটে, চোঙা আকৃতির হয় এবং এর একদিক সরু বা বন্ধ থাকে। চাইয়ের ভেতরে এমনভাবে কাঠামো তৈরি করা হয় যে, মাছ একবার প্রবেশ করলে সহজে আর বের হতে পারে না। এটি সাধারণত নদী, খাল, বিল বা নিচু জমিতে যেখানে পানি জমে থাকে, সেখানে ব্যবহার করা হয়। চাই দিয়ে মাছ ধরার পদ্ধতি চাই দিয়ে মাছ ধরার প্রক্রিয়াটি বেশ সহজ এবং কার্যকর: ১.  চাই স্থাপন: প্রথমে যেখানে মাছ আছে বলে মনে করা হয়, সেখানে চাই স্থাপন করা হয়। এটি পানির নিচে ডুবিয়ে রাখা হয়, যাতে মাছ সহজেই এর ভেতরে প্রবেশ করতে পারে। ২.  প্রবেশপথ: চাইয়ের প্রবেশমুখটি এমনভাবে তৈরি করা হয় যাতে মাছ সহজেই ভেতরে যেতে পারে, কিন্তু ভেতরের দিকে কাঁটার মতো অংশ থাকে যা মাছকে বাইরে আসতে বাধা দেয়। ৩.  আকর্ষণ: অনেক সময় মাছকে আকৃষ্ট করার জন্য চাইয়ের ভেতরে খাবার বা টোপ (যেমন – ছোট পোকামাকড়, চালের গুঁড়ো, বা অন্য ছোট মাছের টুকরা) রাখা হয়। ৪....

কাঁঠাল

ছবি
কাঁ ঠাল (Artocarpus heterophyllus) মূলত দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এক উষ্ণমণ্ডলীয় ফল। এটি বিশ্বের বৃহত্তম গাছ-উৎপন্ন ফল, যা ২৫ কেজি পর্যন্ত ওজন এবং ৬০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। কাঁঠালের গাছে বছরে প্রায় ১৫০টি ফল ধরে। এর বৈজ্ঞানিক নাম হলো Artocarpus heterophyllus। বাংলাদেশের জাতীয় ফল হিসেবে এটি বিশেষভাবে পরিচিত এবং এর অর্থনৈতিক গুরুত্বও অনেক। পুষ্টিগুণ : কাঁঠাল পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি ফল। এতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ। নিচে এর প্রধান পুষ্টি উপাদানগুলো উল্লেখ করা হলো:  * ভিটামিন: কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি থাকে। ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তির জন্য ভালো এবং ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়াও এতে থায়ামিন (B1), রিবোফ্লাভিন (B2), নিয়াসিন (B3) এবং ফোলেট (B9) সহ অন্যান্য বি ভিটামিন বিদ্যমান।  * খনিজ পদার্থ: এটি পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিঙ্ক এবং ম্যাগনেসিয়াম এর ভালো উৎস। পটাসিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, ক্যালসিয়াম হাড় ও দাঁতের জন্য উপকারী এবং আয়রন রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে সাহায্য করে।  * ফাইবার: কাঁঠালে...

লঞ্চ ভ্রমণে দুর্ঘটনা ও আতঙ্ক

লঞ্চ ভ্রমণে দুর্ঘটনা ও আতঙ্ক একটি গুরুতর বিষয়। লঞ্চ দুর্ঘটনা সাধারণত অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করা, খারাপ আবহাওয়া, চালকের অসতর্কতা, যান্ত্রিক ত্রুটি এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাবে ঘটে থাকে। এই ধরনের দুর্ঘটনায় বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটে এবং এর ফলে জনমনে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। দুর্ঘটনার কারণসমূহ:  * অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই (Overcrowding): এটি লঞ্চ দুর্ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ। ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী নেওয়া হলে লঞ্চ ভারসাম্য হারাতে পারে এবং ডুবে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।  * দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া (Adverse Weather): ঝড়ো বাতাস, প্রবল বৃষ্টি বা নদীতে তীব্র স্রোত থাকলে লঞ্চ চালানো বিপজ্জনক হতে পারে। অনেক সময় বৈরী আবহাওয়ার সতর্কতা উপেক্ষা করে লঞ্চ চালানো হয়, যা দুর্ঘটনার কারণ হয়।  * চালকের অসতর্কতা ও অদক্ষতা (Driver Negligence & Incompetence): প্রশিক্ষিত ও অভিজ্ঞ চালকের অভাব, অতিরিক্ত গতিতে লঞ্চ চালানো, অন্য নৌযানের সাথে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হওয়া বা বেপরোয়াভাবে চালানোর কারণে দুর্ঘটনা ঘটে।  * যান্ত্রিক ত্রুটি (Mechanical Faults): লঞ্চের ইঞ্জিন, স্টিয়ারিং বা অন্যান্য ...

জবা ফুল

ছবি
জ বা (Hibiscus rosa-sinensis) একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং সুন্দর ফুল, যা Malvaceae গোত্রের অন্তর্ভুক্ত। এটি প্রধানত পূর্ব এশিয়ার স্থানীয় হলেও বর্তমানে বিশ্বের ক্রান্তীয় ও উপ-ক্রান্তীয় অঞ্চলে ব্যাপকভাবে চাষ করা হয়। বৈশিষ্ট্য  * সাধারণ গঠন: জবা একটি চিরহরিৎ গুল্ম বা ছোট গাছ, যা সাধারণত ২.৫ থেকে ৫ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। এর পাতাগুলো চকচকে এবং কাণ্ড সবুজ ও শাখাযুক্ত।  * ফুল: জবা ফুলের পাপড়ির সংখ্যা সাধারণত পাঁচটি এবং এগুলো উজ্জ্বল লাল, গোলাপী, সাদা, হলুদ, কমলা বা বেগুনিসহ বিভিন্ন রঙের হয়। কিছু জবার প্রজাতিতে থোকা আকারেও ফুল ফোটে। এটি ঠোঙ্গা আকৃতির হয়ে থাকে।  * ফোটার সময়: জবা মূলত গ্রীষ্ম ও শরৎকালীন ফুল হলেও সারা বছরই কমবেশি ফোটে, তবে গ্রীষ্ম-বর্ষায় এর প্রাচুর্য বেশি দেখা যায়।  * পরিচিতি: এটি চায়না রোজ, হাওয়াইয়ান হিবিস্কাস, রোজ ম্যালো, বা শু-ব্ল্যাক প্ল্যান্ট নামেও পরিচিত। বাংলায় এটিকে রক্তজবা, জবা কুসুম, বা ঝুমকা জবাও বলা হয়। উপকারিতা জবা ফুল কেবল সৌন্দর্যের জন্যই নয়, এর অনেক ঔষধি গুণও রয়েছে:  * চুলের যত্নে: জবা চুল পড়া কমাতে, নতুন চুল গজাতে, চ...