পুরুষ জলহস্তী কেন নিজ শিশুকে হ ত্যা করে

একবার ভাবুন তো, জলহস্তী পরিবারে ২৪৩ দিন গর্ভধারণের পর একটা শিশু জলহস্তীর জন্ম। কিন্তু ছেলে সন্তান হলেই বাড়ে যত বিপত্তি। পিতার হাতে ছেলে খু ন। এমন ভাবনায় পরিবারের বাকি সদস্যরা সন্তানকে সারাক্ষণ পাহাড়ায় রাখে, যাতে বাবা তার সন্তানকে হত্যা করতে না পারে। আর বাবা সারাক্ষণই সুযোগ খুঁজে বেড়ায়। একটা ছোট সুযোগই যথেষ্ট; বাবার বিশালাকৃতি মুখের ১ ফুট লম্বা তীক্ষ্ণ দাঁতের আ ঘা তে সন্তানকে হ ত্যা করার জন্য।

কিন্তু বাবার হাতে ছেলে খুনের কেনো এই নৃশংসতা?

ডাঙ্গায় থাকা প্রাণীদের মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম প্রাণী হচ্ছে জলহস্তী। তৃণভোজী এই প্রাণীর ওজন, ১৩০০-১৮০০ কেজি পর্যন্ত হয়। এদের এক একটি দলে ৬-১০ টি পর্যন্ত সদস্য থাকে। যাদের মধ্যে একটিই মাত্র পুরুষ সদস্য। বাকিসব নারী সদস্য। পুরুষ সদস্যটি তার হেরেমে কখনো অন্য পুরুষকে আশ্রয় দিতে চায়না। কারণ, সে কখনো তার রাজত্ব হাতছাড়া করতে চায়না। পরিবারে কণ্যা সন্তানের জন্ম হলে পরম মমতায় সে বড় হয়। আর ছেলে সন্তানের জন্ম মানেই তার রাজত্বের জন্য হুমকি। তাই পুরুষ সদস্যটি সুযোগ পেলে ছেলে জন্মের পরপরই হ ত্যা করে ফেলে। তবে ছেলে সন্তানটি যদি বাবার পায়ে পড়ে বশ্যতা স্বীকার করে, তখন কোন কোন ক্ষেত্রে বাবা তাকে হ ত্যা করে না। তবে সবসময়ই সতর্ক থাকে। রাজ্যের জন্য হুমকি মনে হলে মৃত্যু ব্যাতিত অন্য কোন পথ নেই।

তবে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ছেলে সন্তানটিকে লুকিয়ে বড় করার চেষ্টা করে। তবে সেজন্য ২৪ ঘন্টাই সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। এক সময় সন্তান যখন পরিনত হয়, তখন সে বাবার বিরুদ্ধে বি দ্রো হ ঘোষণা করে। তখন পিতা ও সন্তানের মাঝে জীবন মরন লড়াই হয়। সেখানে মৃত্যু বা পরাজয় বরণ করে মৃতপ্রায় হয়ে দলত্যাগ ব্যাতিত ভিন্ন কোন সুযোগ নেন। প্রকৃতিতে আরো কিছু প্রাণীদের মধ্যে এই প্রবণতা দেখা গেলেও জলহস্তীদের মধ্যে এর প্রবণতা সবচেয়ে বেশি।

কার্টেসীঃ Animal Welfare Society of SAU

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

হরি দল ও অক্ষরজ্ঞানহীন দরিদ্র কৃষক হরিপদ কাপালী

"বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল"

ট্রাইজেমিনাল নিউরালজিয়ার চিকিৎসায় অগ্রগতি - আত্মহত্যার রোগ