আজকে আমরা জেনে নেব মাইগ্রেন সম্বন্ধে বিস্তারিত,

মাইগ্রেন কি ?

মাইগ্রেন (ইংরেজি: Migraine) একটি বিশেষ ধরনের মাথাব্যথা। এটি মাথার যে কোন একপাশে শুরু হয়ে প্রায়শই পুরো মাথায় ছড়িয়ে পড়ে। এতে করে মস্তিষ্কের স্বাভাবিক রক্ত চলাচলে বাধা সৃষ্টি হয়। মাইগ্রেন হলে মাথার নিচের অংশে প্রচুর ব্যথা হয়, রক্তচাপ বাড়তে থাকে এবং মাথা ব্যথার সময় মাথার খুলি নিচে ধমনী বেড়ে যায়। এটি মূলত একটি বংশগত রোগ।

কেন এবং কাদের বেশি হয় ?

 মাইগ্রেন কেন হয় তা পুরোপুরি জানা যায়নি । তবে এটি বংশগত অজ্ঞাত কোন কারণে হতে পারে ।এটি সাধারণত পুরুষের চেয়ে নারীদের বেশি হয়। নারীদের ঋতুস্রাবের সময় মাথা ব্যথা বাড়ে। চকলেট,পনির ,কফি ইত্যাদি খাওয়া, জন্মবিরতিকরণ ঔষধ,দুশ্চিন্তা, অতিরিক্ত ভ্রমণ,ব্যায়াম,অনিদ্রা, অনেকক্ষণ টিভি বা মোবাইল দেখা,দীর্ঘসময় কম্পিউটারের কাজ করা,মোবাইলে কথা বলা ইত্যাদির কারণে এ রোগ হতে পারে। মানসিক চাপ,দুশ্চিন্তা ,কোষ্ঠকাঠিন্য, অতি উজ্জ্বল আলো এই রোগকে  বাড়িয়ে দেয়।

এই ৭ অভ্যাস আপনার অজান্তেই বাড়িয়ে দিতে পারে মাইগ্রেনের সমস্যা:

 (১).পেট খালি রাখা

(২).আবহাওয়া

(৩). মানসিক চাপ

(৪). অতিরিক্ত চিনি জাতীয় খাবার 

(৫).অতিরিক্ত আওয়াজ 

(৬).অতিরিক্ত ঘুমানো 

(৭).হঠাৎ করে কফি খাওয়া বন্ধ করে দেওয়া।

মাইগ্রেনের লক্ষণঃ

▪️কখনও কখনও আমাদের শরীরে ব্যথা হলে  আমরা বুঝতে পারি, ক্লান্তির কারণে এটি হচ্ছে তবে কেবলমাত্র শরীরের অর্ধেক অংশ ব্যথা হলে এটি  মাইগ্রেনের লক্ষণ হতে পারে । মাইগ্রেনকে নিউরোলজিকাল সমস্যাও বলা হয়, এতে ব্যক্তি মাঝেমধ্যে ব্যথা অনুভব করে এবং এই ব্যথা টানা দুই বা তিন দিন অব্যাহত থাকে, যার মধ্যে বমিভাব, টানা  থাকে।

▪️মাইগ্রেনের কারণে রোগী ঠিকমতো ঘুমাতে পারে না।

▪️অনেক ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যাক্তির ফোটোফোবিয়া থাকে যার অর্থ আলোতে সমস্যা। ফোনোফোবিয়ায় মানুষের জোর  শব্দ তে সমস্যা হয়, এগুলোকে মাইগ্রেনের এক ধরণের লক্ষণও বলা যেতে পারে।

মাইগ্রেনের কারনঃ

▪️মাইগ্রেন অনেক কারণের কারণ হতে পারে যেমন মাথাব্যথা, ক্ষুধা হ্রাস, পুরো ঘুমের অভাব, বমি বমিভাব ইত্যাদি, তবে যে ব্যক্তি ইতিমধ্যে রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তে শর্করার মতো অন্যান্য রোগে ভুগছেন মাইগ্রেনের অবস্থা বাড়ে।

▪️কেউ খাবারে অ্যালার্জিযুক্ত, এই অ্যালার্জি মাইগ্রেনের সমস্যা সৃষ্টি করে, অ্যালার্জি শাকসবজি এবং দুধজাত পণ্য থেকেও হতে পারে, ধূমপানের ক্ষেত্রেও অ্যালার্জি হতে পারে। এই সমস্ত কারণে মাইগ্রেনের সমস্যা দেখা দেয়।

মাইগ্রেন এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাঃ

▪️আমাদের প্রতিদিন ঘুম থেকে ওঠা এবং ব্যায়াম করা উচিত, সন্ধ্যায় হাঁটা উচিত, ভারসাম্যযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত, চাপ থেকে দূরে থাকা উচিত। সর্বদা খুশি থাকার চেষ্টা করা উচিত।

▪️মাইগ্রেন এড়ানোর জন্য আমাদের জীবনের প্রতিদিনের অভ্যাসগুলি পরিবর্তন করার জন্য যত্ন নেওয়া উচিত।

মাইগ্রেনের খাদ্যাভ্যাসঃ

যা খাওয়া উচিতঃ

যদি মাইগ্রেনের সমস্যা থেকে থাকে তবে প্রাতঃরাশে শুকনো ফল, দুধ, দই, মসুর, মাংস এবং মাছ ইত্যাদি খেতে হবে। রুটি, ভাত, আলু, প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া যেতে পারে এবং সালাদ খাওয়া উচিত রাতের খাবারের জন্য।

যা খাওয়া অনুচিতঃ

মাইগ্রেনে জাঙ্ক ফুড ও বাজারের খোলা খাবার এবং উচ্চ মশলাদার খাদ্য গ্রহণ করা কখনও উচিত নয়।

মাইগ্রেন থেকে মুক্তি পাবার উপায়ঃ

মাইগ্রেন থেকে মুক্তি পেতে আমাদের মেডিটেশন এবং যোগব্যায়াম করা উচিত। যদি যোগব্যায়াম করতে না পারেন তবে অনুশীলন করতে পারেন, অনুশীলনের মাধ্যমে শরীরের চাপ কমে যাবে এবং হতাশা দূর হবে। আপনি যেখানে যোগব্যায়াম করছেন সেখানে সকালের সূর্যের আলো থাকতে হবে। মাইগ্রেনে আক্রান্ত ব্যক্তিদের বেশি ঘুমানো উচিত। হঠাৎ করে ব্যথা হলে ব্যথার বড়ি না নেওয়ার চেষ্টা করুন। যদি অতিরিক্ত ব্যথা হয় তবে আপনার উচিত একজন ভাল নিউরোলজিস্ট ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা।

চিকিৎসা:

Tab, Norium 10mg 0+0+1 খাবার পর দুই মাস।

Tab, Migraine 1.5mg 0+0+1 খাবার পর দুই মাস।

Tab,Rivotril 0.5mg 0+0+1 খাবার পর এক মাস।

Tab,Esotid MUPS 20mg 1+0+1 খাবার আগে দুই মাস।

ডা:মোহাম্মদ আলী

চীফ কনসালট্যান্ট

বিজিএমইএ

সেক্টর-১৩.

উত্তরা ঢাকা-১২৩০.